সাইয়েদুল ইস্তিগফার (Sayyidul Istighfar) – আরবি উচ্চারণ, অর্থ ও পড়ার সময় এবং ফজিলত,

bdnayem
0

 সাইয়েদুল ইস্তিগফার (Sayyidul Istighfar) –  আরবি উচ্চারণ, অর্থ ও পড়ার সময় এবং ফজিলত,




সাইয়্যেদুল ইস্তেগফার কি?


সাইয়্যেদুল ইস্তেগফার! নামের মধ্যেই এর মাহাত্ম্য লুকিয়ে আছে। 'সাইয়্যেদ' শব্দের অর্থ নেতা, সরদার বা শ্রেষ্ঠ। আর 'ইস্তেগফার' অর্থ হলো আল্লাহর কাছে ক্ষমা প্রার্থনা করা। সুতরাং, সাইয়্যেদুল ইস্তেগফার-এর অর্থ দাঁড়ায় ক্ষমা চাওয়ার শ্রেষ্ঠ দোয়া।

এটি এমন একটি দোয়া, যা বিশ্বনবী হযরত মুহাম্মদ (সাঃ) নিজেই তাঁর উম্মতদের শিখিয়েছেন। এই দোয়ার প্রতিটি বাক্যে বান্দার দুর্বলতা ও আল্লাহর প্রতি তার পূর্ণ আনুগত্যের গভীরতম প্রকাশ রয়েছে। আজ আমরা জানবো এই শ্রেষ্ঠ দোয়ার আরবি, বাংলা উচ্চারণ, এর গভীর অর্থ, এটি পড়ার নিয়ম এবং এর অবিশ্বাস্য ফজিলত সম্পর্কে বিস্তারিত জানবো।


সাইয়্যেদুল ইস্তেগফার এর ফজিলত 


এই দু'আটিকে 'সাইয়্যেদ' বা 'শ্রেষ্ঠ' বলার কারণ হলো এর মহৎ ফজিলত

১ * সময়: হাদিস অনুযায়ী, এটি সকালবেলা (ফজরের পর বা দিনের প্রথম ভাগে) এবং সন্ধ্যাবেলা (আসর বা মাগরিবের পর) পাঠ করা উত্তম।


 ২* গুরুত্ব: এটি দৃঢ় বিশ্বাস সহকারে এবং অর্থ বুঝে পাঠ করা অপরিহার্য, তবেই হাদিসে বর্ণিত ফজিলত লাভ করা সম্ভব।


৩ * সংখ্যা: দিনে একবার করে সকাল-সন্ধ্যায় পড়া যেতে পারে, তবে যত বেশি পড়া যায় তত ভালো।


 ৪* জান্নাত লাভের সুসংবাদ: রাসূল (সাঃ) এর সুস্পষ্ট ঘোষণা অনুযায়ী, যে ব্যক্তি দৃঢ় বিশ্বাসের সাথে এটি পাঠ করে এবং ঐ দিন বা রাতে ইন্তেকাল করে, সে জান্নাতি হবে। এটিই এই দোয়ার সর্বশ্রেষ্ঠ ফজিলত।


৫ * গুনাহ মাফের নিশ্চয়তা: এই দোয়াতে বান্দা আল্লাহর নেয়ামত ও নিজের গুনাহের স্পষ্ট স্বীকারোক্তি দিয়ে ক্ষমা প্রার্থনা করে, যা আল্লাহর ক্ষমা লাভের পথকে সুগম করে।


৬ * মনের শান্তি: নিয়মিত এই দু'আ পাঠের মাধ্যমে বান্দার মন থেকে হতাশা ও অস্থিরতা দূর হয় এবং আল্লাহর নৈকট্য লাভে প্রশান্তি আসে।


৭ * প্রতিজ্ঞা নবায়ন: এই দু'আর মাধ্যমে আল্লাহর সাথে করা ঈমান ও আনুগত্যের প্রতিজ্ঞা প্রতি মুহূর্তে নতুন করে নবায়ন করা হয়।


সাইয়্যেদুল ইস্তেগফার আরবি 

اللَّهُمَّ أَنْتَ رَبِّي لَا إِلَهَ إِلَّا أَنْتَ، خَلَقْتَنِي وَأَنَا عَبْدُكَ، وَأَنَا عَلَى عَهْدِكَ وَوَعْدِكَ مَا اسْتَطَعْتُ، أَعُوذُ بِكَ مِنْ شَرِّ مَا صَنَعْتُ، أَبُوءُ لَكَ بِنِعْمَتِكَ  عَلَيَّ، وَأَبُوءُ بِذَنْبِي فَاغْفِرْ لِي، فَإِنَّهُ لَا يَغْفِرُ الذُّنُوبَ إِلَّا أَنْتَ 


সাইয়্যেদুল ইস্তেগফার আরবি উচ্চারণ।


আল্লাহুম্মা আনতা রব্বি। লা ইলাহা ইল্লা আনতা। খালাকতানি ওয়া আনা আবদুকা। ওয়া আনা আলা আহদিকা। ওয়া ওয়া’দিকা মাসতাতা’তু। আউজু বিকা মিন শাররি মা-সানাআ’তু। আবুয়ু লাকা বিনি’মাতিকা আলাইয়্যা। ওয়া আবুয়ু লাকা বি জাম্বি। ফাগফিরলি। ফা ইন্নাহু লা ইয়াগফিরুজ জুনবা ইল্লা আনতা।


সাইয়্যেদুল ইস্তেগফার অর্থ 


হে আল্লাহ! আপনি আমার প্রভু, আপনি ছাড়া কোনো ইলাহ বা মাবুদ নেই; আপনিই আমাকে সৃষ্টি করেছেন এবং আমি আপনারই গোলাম, আর আমি আছি আপনার প্রতিশ্রুতি ও অঙ্গীকারের ওপর আমার সাধ্যমতো; আমি আপনার কাছে পানাহ ও আশ্রয় চাই আমার অনাসৃষ্টির অকল্যাণ এবং অপকার ও ক্ষতি হতে। আমি স্বীকার করছি আমার প্রতি আপনার সব নিয়ামত, আরও স্বীকার করছি আপনার সমীপে আমার সকল অপরাধ; সুতরাং আমাকে ক্ষমা করে দিন, আর অবশ্যই আপনি ছাড়া ক্ষমা করার আর কেউ নেই (সুনানে নাসায়ি ৫৫২১, বুখারি ও মুসলিম)।



সাইয়্যেদুল ইস্তেগফার কখন পড়তে হয় 


সাইয়্যেদুল ইস্তেগফার পড়ার জন্য মূলত কোনো নির্দিষ্ট সূরার আয়াত নয়, এটি একটি বিশেষ হাদিস থেকে প্রমাণিত দু'আ। এটি পাঠের প্রধান নিয়ম হলো:

 * সময়: হাদিস অনুযায়ী, এটি সকালবেলা (ফজরের পর বা দিনের প্রথম ভাগে) এবং সন্ধ্যাবেলা (আসর বা মাগরিবের পর) পাঠ করা উত্তম।

ক্ষমা প্রার্থনার নির্দিষ্ট কোনো সময় নেই। যখনই পাপের জন্য অনুতপ্ত হবে তখনই আল্লাহর কাছে ক্ষমা প্রার্থনা করা উচিত। তবে বিশেষজ্ঞরা বলে থাকেন সাইয়েদুল ইস্তিগফার সকালে ও রাতে এই দুই সময় পড়া সবচেয়ে উত্তম। রসুলুল্লাহ সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন, 
 
সাইয়েদুল ইস্তেগফার সকালে পাঠ করে কেউ যদি দিনে মারা যায় তবে সে জান্নাতি, কেউ যদি রাতে পাঠ করে ওই রাতে মারা যায় তাহলে সে জান্নাতি। 
 
এর থেকে বোঝা যায়, সাইয়েদুল ইস্তিগফার সকালে ও রাতে দুবার পাঠ করা উচিত।


সাইয়্যেদুল ইস্তেগফার ছবি 











একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

0মন্তব্যসমূহ
* Please Don't Spam Here. All the Comments are Reviewed by Admin.
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন (0)

#buttons=(Accept !) #days=(20)

Our website uses cookies to enhance your experience. Learn More
Accept !